কারান পরিবার মানেই ক্রিকেট। এক ভাই টম কারান, আরেকজন স্যাম কারান—দুজনেই ইংল্যান্ড জাতীয় দলের পরিচিত মুখ। চাইলে সেই পথেই হাঁটতে পারতেন বেন কারান। কিন্তু তিনি বেছে নিয়েছেন ভিন্ন পথ। নিজের শিকড়, পিতৃভূমি জিম্বাবুয়েকেই দিয়েছেন প্রাধান্য। বাবার দেশ, দাদার দেশ—সেই জিম্বাবুয়ের জার্সিই এখন গায়ে জড়িয়ে মাঠে নামছেন বেন।

বাংলাদেশের বিপক্ষে চলমান টেস্ট সিরিজে জিম্বাবুয়ের দলে আছেন এই মিডল অর্ডার ব্যাটার। বর্তমানে চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্ট সামনে রেখে দলীয় অনুশীলনে ব্যস্ত তিনি। আজ (শনিবার) সংবাদ সম্মেলনে এসে নিজের অভিজ্ঞতা, অনুভূতি এবং পথচলার গল্প শোনান বেন কারান।

‘পরিবেশ, পরিস্থিতি আমাকে ইংল্যান্ডে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে কিছু বছর খেলে আবার জিম্বাবুয়ের হয়ে খেলার জন্য ফিরে এসেছি। এটা আমার জন্য দারুণ সম্মানের ব্যাপার এবং আমি আমার খেলাটাকে দারুণ উপভোগ করছি,’ বলেন বেন।

বেন কারানের জন্ম ইংল্যান্ডের নর্দাম্পটনে। বাবা কেভিন কারান সেই সময় সেখানকার কাউন্টি ক্লাবের হয়ে খেলতেন। সেখানেই বেড়ে ওঠা, ক্রিকেট শেখা সবকিছুই ইংল্যান্ডেই। কিন্তু যখন জাতীয় দলের দরজা খুলে গেল না, তখন পেছনে ফিরে দেখলেন প্যাট্রিক কারান (দাদা) এবং কেভিন কারান (বাবা)–দুজনেই যারা একসময় জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের পরিচিত মুখ ছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় পিতৃভূমির হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নেন বেন।

জিম্বাবুয়ের হয়ে প্রথমবার টেস্ট খেলতে এসে পেয়েছেন জয়ের স্বাদও। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিলেট টেস্টে জিম্বাবুয়ের জয় এসেছে ৭ বছর পর। টেস্টে তাদের জন্যও এটি ছিল দীর্ঘ ৪ বছরের জয়ের খরা কাটানোর ম্যাচ।

‘জিম্বাবুয়ের হয়ে খেলাটা দারুণ অনুভূতির ব্যাপার। মাঝেমধ্যে আপনি জিতবেন, মাঝেমধ্যে হারবেন। কিন্তু চেষ্টা করে যেতে হবে যত বেশি ম্যাচ জিততে পারি এবং জিম্বাবুয়েকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি,’ বলেন বেন।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নতুন হলেও নিজেকে দ্রুত মানিয়ে নিতে সহায়তা পেয়েছেন অভিজ্ঞ দুই সতীর্থ শন উইলিয়ামস এবং ক্রেইগ আরভাইনের কাছ থেকে। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বেন বলেন,
‘তারা অনেক পরামর্শ দেন, অবশ্যই তা কাজে দেয়। আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একেবারেই নতুন। ফলে তারা চেষ্টা করছেন আমাকে যতটা সম্ভব অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে। এতে করে আমি দ্রুত উন্নতি করতে পারছি।’

একটা ক্রিকেট পরিবার থেকে উঠে এসেও ভিন্ন পথ বেছে নেওয়া বেন কারানের কাহিনি যেন ক্রিকেটের বাইরেও এক অনুপ্রেরণার গল্প—নিজের শিকড়ে ফিরে গিয়ে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার গর্বের গল্প।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts