দুইবারের ওয়ার্ল্ড হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন ও অলিম্পিক স্বর্ণপদকজয়ী বক্সার জর্জ ফোরম্যান পরলোকগমন করেছেন। ৭৬ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে পরিবার।
পরিবারের শোকবার্তা
২২ মার্চ (স্থানীয় সময় ২১ মার্চ) ফোরম্যানের অফিসিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়—
“আমাদের হৃদয় আজ গভীর শোকে আচ্ছন্ন। আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমাদের প্রিয় জর্জ এডওয়ার্ড ফোরম্যান সিনিয়র শান্তিপূর্ণভাবে ২১ মার্চ ২০২৫ তারিখে পৃথিবী ছেড়েছেন। তিনি ছিলেন এক নিবেদিত যাজক, দয়ালু স্বামী, স্নেহশীল বাবা, এবং গর্বিত দাদা ও প্রপিতামহ। তার জীবন ছিল অটুট বিশ্বাস, বিনয় ও উদ্দেশ্যে পূর্ণ।”
বক্সিং ক্যারিয়ারে ফোরম্যানের সাফল্য
১৯৭৩ সালে কিংবদন্তি জো ফ্রেজিয়ারকে হারিয়ে প্রথমবার হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নের খেতাব জেতেন জর্জ ফোরম্যান। সেই ম্যাচে মাত্র দুই রাউন্ডে ছয়বার ফ্রেজিয়ারকে নকআউট করেন তিনি। তবে ১৯৭৪ সালে ‘রাম্বল ইন দ্য জঙ্গল’ ফাইটে মোহাম্মদ আলীর কাছে সেই খেতাব হারান তিনি।
১৯৯৪ সালে ৪৫ বছর বয়সে ফের রিংয়ে ফিরে আসেন ফোরম্যান। ঐতিহাসিক এক লড়াইয়ে মাইকেল মুরারকে হারিয়ে দ্বিতীয়বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হন তিনি। এই প্রত্যাবর্তন অনুপ্রাণিত করেছিল হলিউড তারকা সিলভেস্টার স্ট্যালোনকে, যিনি পরবর্তীতে ‘রকি বলবোয়া’ মুভির কাজ শুরু করেন।
অলিম্পিক ও বক্সিং রেকর্ড
ফোরম্যানের সাফল্যের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬৮ মেক্সিকো সিটি অলিম্পিক থেকে, যেখানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে স্বর্ণপদক জয় করেন। তার পেশাদার ক্যারিয়ারে ৮১ ম্যাচের মধ্যে জয় পেয়েছিলেন ৭৬টিতে, যার মধ্যে ৬৮ বার প্রতিপক্ষকে নকআউট করেন।
বক্সিংয়ের বাইরে ফোরম্যানের জীবন
অবসরের পর ‘জর্জ ফোরম্যান গ্রিল’ নামে একটি কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স ব্র্যান্ড চালু করেন, যা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। প্রথমবার অবসরের পর যাজক হিসেবে ধর্ম প্রচার ও মানবসেবায় নিজেকে নিয়োজিত করেন এবং আমৃত্যু সেই কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন।
এক কিংবদন্তির বিদায়
বক্সিং রিংয়ে দাপটের সঙ্গে লড়াই করা এই কিংবদন্তি ব্যক্তিগত জীবনে ছিলেন বিনয়ী ও মানবিক। তার মৃত্যু ক্রীড়াজগতে এক বিশাল শূন্যতার সৃষ্টি করল।