ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ফুটবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা মাঠে যেমন উত্তাপ ছড়ায়, তেমনি মাঝে মাঝে তা মাঠের বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। এবার লেডিস কাপ প্রীতি টুর্নামেন্ট খেলতে গিয়ে আর্জেন্টাইন ক্লাব রিভার প্লেটের চার নারী ফুটবলারকে বর্ণবাদের অভিযোগে আটক করা হয়েছে।
ব্রাজিলের একটি আদালত থেকে তাদের আটক রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ ওঠে, ম্যাচ চলাকালীন তারা প্রতিপক্ষ ও বল বয়দের সঙ্গে বর্ণবাদী আচরণ করেছেন।
ঘটনার সূত্রপাত
২১ ডিসেম্বর রিভার প্লেটের বিপক্ষে ম্যাচে ব্রাজিলিয়ান ক্লাব গ্রেমিওর সঙ্গে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়। ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র হলেও রেফারি গ্রেমিওকে জয়ী ঘোষণা করেন।
তর্ক-বিতর্ক শুরু হয় রিভার প্লেটের ক্যান্ডেলা দিয়াসের বিরুদ্ধে, যিনি ম্যাচ চলাকালীন বল বয়ের উদ্দেশে বানরের অঙ্গভঙ্গি করেন। এই ঘটনায় গ্রেমিওর খেলোয়াড়রা প্রতিবাদ জানান এবং দুই দলের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়।
রেফারি রিভার প্লেটের ছয়জন খেলোয়াড়কে লাল কার্ড দেখান, যার ফলে ন্যূনতম খেলোয়াড়ের অভাবে ম্যাচ শেষ হয়ে যায়।
আইনি পদক্ষেপ
বর্ণবাদের অভিযোগে ম্যাচ-পরবর্তী তদন্তের পর রিভার প্লেটের চার খেলোয়াড়—ক্যান্ডেলা দিয়াস, কামিলা দুয়ার্তে, হুয়ানা কানগারো, এবং মিলাগরোস দিয়াজ—কে আটক করে পুলিশ।
ব্রাজিলের সাও পাওলো জননিরাপত্তা বিভাগ জানায়, আদালত তাদের প্রিভেনটিভ ডিটেনশনের নির্দেশ দিয়েছে, যাতে তারা ব্রাজিল ছেড়ে পালাতে না পারেন।
টুর্নামেন্ট কমিটির শাস্তিমূলক ব্যবস্থা
এই ঘটনার জেরে টুর্নামেন্ট কমিটি রিভার প্লেট দলকে টুর্নামেন্ট থেকে বহিষ্কার করেছে এবং তাদের আগামী দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। কমিটি বলেছে, টুর্নামেন্টের ভাবমূর্তি রক্ষার্থে এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রিভার প্লেট ক্লাব একটি বিবৃতিতে তাদের খেলোয়াড়দের আচরণের নিন্দা জানিয়েছে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তারা খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও উল্লেখ করেছে। তবে ক্লাবের আইনজীবীর পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
গ্রেমিওর শিরোপা জয়
উল্লেখ্য, টুর্নামেন্টের ফাইনালে বাহিয়াকে টাইব্রেকারে ২-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা জিতেছে গ্রেমিও। নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে ড্র হয়েছিল।
এই ঘটনা শুধু টুর্নামেন্টের ভাবমূর্তিতে কালিমা লেপন করেনি, বরং ফুটবলে বর্ণবাদবিরোধী প্রচারণার প্রয়োজনীয়তাও সামনে নিয়ে এসেছে।