বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পৌঁছানোর দৌড়ে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির গুরুত্ব দু’দলের জন্যই অনেক। পার্থে প্রথম টেস্ট জিতে লিড নিয়েছিল ভারত। তবে অ্যাডিলেডের পিঙ্ক বল টেস্টে উল্টো চিত্র দেখাল অস্ট্রেলিয়া। মিচেল স্টার্ক এবং প্যাট কামিন্সের দুর্দান্ত বোলিং তোপে ভারত তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে। অজিদের সামনে মাত্র ১৯ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায়, যা ১০ উইকেট হাতে রেখেই সহজেই পেরিয়ে যায় স্বাগতিকরা।
তিন দিনেই শেষ ম্যাচ, রেকর্ড কম বল
দিবারাত্রির এই টেস্ট মাত্র তিন দিনেই শেষ হয়। দুই দলের সম্মিলিত ইনিংস শেষ হতে লাগে মাত্র ১,০৩১ বল, যা ভারত-অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ইতিহাসে সর্বনিম্ন। দ্বিতীয় দিনের শেষেই ম্যাচ অনেকটা হাতছাড়া হয়ে যায় ভারতের। ১২৮ রানে ৫ উইকেটে দিন শেষ করা ভারত তৃতীয় দিনে অলআউট হয় ১৭৫ রানে। প্রথম ইনিংসের ১৫৭ রানের বিশাল লিডের সুবাদে অস্ট্রেলিয়ার সামনে টার্গেট দাঁড়ায় মাত্র ১৯ রান।
অজিদের দুই ওপেনার, নাথান ম্যাকসুইনি (১০) ও উসমান খাজা (৯), কোনো চাপ ছাড়াই ২০ বলেই জয় নিশ্চিত করেন।
হেড ও স্টার্কের নায়কোচিত পারফরম্যান্স
অ্যাডিলেডে পিঙ্ক বল টেস্টে সব সময়ই উজ্জ্বল অস্ট্রেলিয়া। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রথম ইনিংসে মিচেল স্টার্কের দুর্দান্ত বোলিংয়ে ভারত গুটিয়ে যায় মাত্র ১৮০ রানে। ৪৮ রানে স্টার্ক নেন ৬ উইকেট, যা তার ক্যারিয়ারসেরা।
এরপর ব্যাট হাতে ঝলসে ওঠেন ট্রাভিস হেড। ১৪১ বলে ১৭টি চার ও ৪টি ছক্কায় ১৪০ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে অস্ট্রেলিয়াকে লিড এনে দেন। তার আগে মার্নাস লাবুশেনের সঙ্গে ৬৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।
ভারতের পক্ষে প্রথম ইনিংসে ৪টি করে উইকেট শিকার করেন মোহাম্মদ শামি ও মোহাম্মদ সিরাজ।
ভারতের ব্যাটিং বিপর্যয়
ভারতীয় ব্যাটারদের দায়িত্ব ছিল বড় স্কোর গড়া, তবে তা সম্ভব হয়নি। দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১৯ রান যোগ করার আগেই ভারতের ৮ উইকেট পড়ে যায়। বলার মতো ইনিংস খেলেন কেবল নিতীশ কুমার রেড্ডি, যিনি ৪২ রান করেন। তার লড়াই ছাড়া ভারত ইনিংস ব্যবধানে হেরে যেত।
লোকেশ রাহুলকে ওপেনিংয়ে ফেরানোর পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়। মিডল অর্ডারে নেমে রান পাননি রোহিত শর্মা, ব্যর্থ হন বিরাট কোহলিও।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে প্যাট কামিন্স শিকার করেন ৫ উইকেট। স্কট বোল্যান্ড ও মিচেল স্টার্ক নেন যথাক্রমে ৩ ও ২ উইকেট।
ম্যাচসেরা ট্রাভিস হেড
ম্যাচজুড়ে পারফরম্যান্সের কারণে ম্যাচসেরার পুরস্কার পেয়েছেন ট্রাভিস হেড। তার ইনিংসেই মূলত ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়।
এই জয়ে সিরিজে ১-১ সমতা ফেরাল প্যাট কামিন্সের দল। তৃতীয় টেস্টকে সামনে রেখে দুই দলের আত্মবিশ্বাস এখন সমান তুঙ্গে।