পাকিস্তান ক্রিকেটের বর্তমান অবস্থা যেন ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছে। ঘরের মাঠে সবশেষ ১১ টেস্টে জয়শূন্য থাকায় ১ হাজার ৩০০ দিনের বেশি সময় ধরে তারা টেস্ট জয়ের মুখ দেখেনি। আরও বিব্রতকর হলো, টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৭ বছরের ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে পাকিস্তান এমন লজ্জার রেকর্ড গড়েছে, যেখানে প্রথম ইনিংসে ৫ শতাধিক রান করেও ইনিংস ব্যবধানে ম্যাচ হেরেছে শান মাসুদের দল। ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের কাছে হারের পরও বাংলাদেশ সিরিজেও পরাজিত হয়েছে তারা। এই পারফরম্যান্সে হতাশ ও ক্ষুব্ধ পাকিস্তানের সাবেক তারকা পেসার শোয়েব আখতার।

এক টিভি অনুষ্ঠানে শোয়েব আখতার পাকিস্তান দলের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, পাকিস্তান ক্রিকেটের বর্তমান অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে এখন শুধু প্রার্থনাই করা যেতে পারে। তিনি বলেন, “আমি গত এক দশক ধরে এই অধঃপতন দেখছি। পরিস্থিতি অত্যন্ত হতাশাজনক। দল হারতেই পারে, কিন্তু অন্তত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেট খেলার কথা ছিল। কিন্তু গত দুই দিনে যা দেখলাম, তা পুরোপুরি আশাহীন। এর মাধ্যমে বোঝা যায় আমাদের দলে যথেষ্ট সামর্থ্য নেই। ইংল্যান্ড আমাদের বিরুদ্ধে ৮০০-এর বেশি রান করেছে, বাংলাদেশও আমাদের হারিয়েছে।”

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট তালিকায় পাকিস্তান এখন সবার নিচে অবস্থান করছে। ৮টি টেস্ট ম্যাচ খেলে তারা মাত্র ২টি জয় পেয়েছে, যা তাদের তালিকার তলানিতে ঠেলে দিয়েছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে শোয়েব বলেন, “অনেক সমর্থক বলছেন, পাকিস্তানের টেস্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করা উচিত। আমাদের টেস্ট খেলা বন্ধ করা উচিত এবং দল পুনর্গঠনের জন্য দুই বছরের সময় দেওয়া উচিত। এমনকি আইসিসিও ভাবছে, পাকিস্তানে দল পাঠিয়ে তাদের টেস্ট স্ট্যাটাস বাঁচিয়ে রাখা উচিত কি না। এই পরাজয় আসলেই হৃদয় বিদারক। এটি পাকিস্তান ক্রিকেট, সমর্থক এবং নতুন প্রতিভার জন্য অত্যন্ত কষ্টের।”

শোয়েব আরও প্রশ্ন তুলেছেন পিসিবির পরিচালনা ও নেতৃত্বের মান নিয়ে। তার মতে, দুর্বল নেতৃত্ব ও ব্যবস্থাপনা দলের মধ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব তৈরি করছে। তিনি বলেন, “যদি আপনার ম্যানেজমেন্ট ও অধিনায়ক দুর্বল হয়, দলে গ্রুপিং হবেই। অধিনায়ক স্বার্থপর হলে দলে বিভেদ দেখা দেবেই, আর কোচরা যদি অধিনায়ককে ভয় পায়, তবে সমস্যা আরও প্রকট হবে।”

আগামী ১৫ অক্টোবর মুলতান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। তবে শোয়েব আখতার মনে করেন, পরবর্তী টেস্ট ম্যাচগুলোতে পাকিস্তানের জয়ের সম্ভাবনা খুবই কম। তবুও তিনি আশা করেন, পাকিস্তান দল যত দ্রুত সম্ভব পুরনো ছন্দে ফিরে আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts