২২ গজে যখন সব বোলার এক প্রান্তে, তখন সম্পূর্ণ ভিন্ন এক মাপের পেসার দাঁড়িয়ে থাকেন আরেক প্রান্তে—জাসপ্রিত বুমরাহ। এমন মন্তব্য বহুবার শুনতে হয়েছে ভারতীয় এই পেস সেনসেশনকে। হেডিংলিতে চলমান ইংল্যান্ড-ভারত টেস্টে আবারও ধারাভাষ্য বক্স থেকে শোনা গেল সেই সুর। সাবেক ইংলিশ ক্রিকেটার মার্ক বুচার বুমরাহর বোলিং দেখে বলেই ফেললেন—“মনে হচ্ছে একেবারে ভিন্ন এক ক্রিকেট দেখছি!”
দ্বিতীয় দিন সেঞ্চুরির ঝড় উঠলেও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন বুমরাহ। ব্যাট হাতে ঋষভ পান্ত (১৩৪), যশস্বী জয়সওয়াল (১০১) ও শুভমান গিল (১৪৭) বড় রান করে ভারতকে নিয়ে যান ৪৭১ রানে। দ্বিতীয় দিন ইংল্যান্ডও জবাব দিতে শুরু করে—ওলি পোপ অপরাজিত ১০০ রানে, আর বেন ডাকেট ৬২ করে ফিরেছেন। তবে এই দিনে সবার নজর কেড়ে নিয়েছেন বুমরাহ।
শুধু তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেটই নয়, বুমরাহ ভেঙেছেন এক ঐতিহাসিক রেকর্ডও। পাকিস্তানের কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরামের ২৪ বছরের পুরোনো একটি রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে, যাদের সম্মিলিতভাবে ‘সেনা’ বলা হয়, সেই চার দেশের বিপক্ষে টেস্টে এশিয়ান বোলার হিসেবে সর্বোচ্চ উইকেট এখন বুমরাহর দখলে।
সেনা দেশের বিপক্ষে এশিয়ান বোলারদের সর্বোচ্চ টেস্ট উইকেট:
জাসপ্রিত বুমরাহ – ১৪৮ (মাত্র ৬০ ইনিংসে)
ওয়াসিম আকরাম – ১৪৬
অনিল কুম্বলে – ১৪১
ইশান্ত শর্মা – ১৩০
মোহাম্মদ শামি – ১২৩
বুমরাহর ইনিংসের শুরুটাই ছিল আগুন ঝরানো। ষষ্ঠ বলেই ফিরিয়ে দেন জ্যাক ক্রাউলিকে, স্লিপে ধরা পড়েন ব্যাটের কানায় লেগে। এরপর ডাকেটের একটি সহজ ক্যাচ মিস করেন জাদেজা, তবে পরবর্তীতে তাকেও বোল্ড করে নেন বুমরাহ। এরপর অভিজ্ঞ জো রুটকেও ফেরান মাত্র ২৮ রানে।
যেখানে হেডিংলির পিচে প্রায় দেড় দিন ধরে অন্য বোলাররা সংগ্রাম করছিলেন, সেখানে বুমরাহ একাই খেলায় মোড় ঘুরিয়ে দেন। ৪৭১ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ইংল্যান্ডের সংগ্রহ ২০৯/৩—তবে ভারতের বড় লিডের ছায়ায় এখনো তারা চাপে। সেই চাপের নাম—জাসপ্রিত বুমরাহ।