ভারতীয় জাতীয় ফুটবল দলের নতুন কোচ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এক চমকপ্রদ নাম দেখে রীতিমতো চমকে উঠেছে অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন (এআইএফএফ)-এর টেকনিক্যাল কমিটি। পরিচিত অনেক কোচের মাঝে তালিকার নিচে ছিল এক কিংবদন্তি ফুটবলারের নাম—জাভি হার্নান্দেজ।
বার্সেলোনার সাবেক মিডফিল্ডার ও কোচ, স্পেনের হয়ে বিশ্বকাপজয়ী জাভি—যিনি বার্সার জার্সিতে ৭০০-র বেশি ম্যাচ খেলেছেন—তার নাম দেখে বিস্মিত হন কর্মকর্তারা। এআইএফএফ সূত্রে জানা গেছে, আবেদনটি পাঠানো হয়েছিল জাভির ব্যক্তিগত ইমেইল থেকে। যদিও অন্য প্রার্থীদের মতো তার যোগাযোগ নম্বর ছিল না, তবে আবেদনটি ছিল সত্যিকারের।
জাতীয় দলের ডিরেক্টর সুব্রত পাল বিষয়টি নিশ্চিত করে টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে বলেন, “হ্যাঁ, জাভির তরফ থেকে একটি ইমেইল এসেছিল। তার নাম তালিকায় ছিল।” এ খবর প্রকাশ্যে আসতেই ভারতীয় ফুটবল অঙ্গনে শোরগোল পড়ে যায়।
আবেদনকারীদের মধ্যে আরও ছিলেন ভারতের সাবেক কোচ স্টিফেন কনস্টানটাইন, লিভারপুলের সাবেক ফরোয়ার্ড হ্যারি কিউয়েল, ব্ল্যাকবার্ন রোভার্সের প্রাক্তন ম্যানেজার স্টিভ কিন, এবং ঘরোয়া ফুটবলের পরিচিত মুখ খালিদ জামিলসহ বেশ কয়েকজন।
জাভি সম্প্রতি কাতারের আল-সাদ ক্লাব এবং বার্সেলোনার কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কোচ হিসেবে তার ঝুলিতে আছে ২০২২–২৩ মৌসুমে লা লিগা শিরোপা সহ দুটি ট্রফি। ফলে এমন একজন ফুটবল মহারথী ভারতীয় দলের কোচ হতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন, তা অনেকের কাছেই অভাবনীয়।
তবে সবকিছু জেনেও জাভিকে নিয়ে এগোচ্ছে না ফেডারেশন। এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “জাভি সত্যিই আগ্রহ দেখিয়েছিলেন, এবং তাকে হয়তো রাজি করানো যেত। কিন্তু তাকে নিয়োগ দিতে যে অর্থ ব্যয় হবে, সেটা আমাদের সামর্থ্যের বাইরে।”
জাভির খেলোয়াড়ি জীবনও সমানভাবে উজ্জ্বল। স্পেনের হয়ে ২০১০ সালে জিতেছেন বিশ্বকাপ, পাশাপাশি দুটি ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ। ক্লাব পর্যায়ে বার্সেলোনার হয়ে ২৫টি ট্রফি জিতেছেন, যার মধ্যে রয়েছে ৮টি লা লিগা এবং ৪টি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা। টিকি-টাকা ফুটবলের প্রতীক এই মিডফিল্ডার দীর্ঘদিন বার্সার কৌশলগত নেতৃত্বে ছিলেন।
এক সাক্ষাৎকারে জাভি বলেছিলেন, “আমি মাঝে মাঝে ভারতীয় লিগ দেখি, কারণ সেখানে অনেক স্প্যানিশ কোচ কাজ করছেন।” সেই আগ্রহ থেকেই হয়তো ভারতের জাতীয় দলের কোচ হওয়ার আবেদন করেছিলেন তিনি।
তবে জাভিকে পেতে ভারতের ফুটবল প্রশাসনের আর্থিক সীমাবদ্ধতাই এখন সবচেয়ে বড় বাধা। আর সেই কারণেই হয়তো এই ইতিহাস গড়া সম্ভাবনাও আপাতত অতীত হয়ে যাচ্ছে।