বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। শনিবার দুপুরে এই বৈঠকের পর তিনি যান ক্রীড়া সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসজেএ) কার্যালয়ে।

দীর্ঘদিনের ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গী বুলবুল এই আড্ডায় ফিরে যান তার অতীত স্মৃতিতে—গেন্ডারিয়ার ফুটবল মাঠ থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নানা অভিজ্ঞতায়। তবে এই আড্ডার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল তার নতুন পরিচয়—বিসিবি সভাপতি।

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে বুলবুল বলেন, বিসিবিতে তিনি কাজ করতে চান তিনটি মূল নীতির ভিত্তিতে—“শতভাগ ট্রাস্ট, শতভাগ প্রোগ্রাম এবং শতভাগ রিচ”। তিনি জানান, ‘ক্রিকেট ইন বাংলাদেশ’ ধারণার আওতায় তিনটি প্রধান কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে—
১. স্পিরিট অব ক্রিকেট আপগ্রেড,
২. সবার জন্য হাই পারফরম্যান্স,
৩. সারা দেশে বিসিবির সরাসরি সংযোগ নিশ্চিত করা।

তিনি বলেন, “ক্রিকেট শুধু মিরপুরে নয়, সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। ২০০০ সালে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর থেকেই আঞ্চলিক কাঠামোর কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু বাস্তবায়ন হয়নি। এবার সেটা বাস্তবায়ন করাই প্রধান লক্ষ্য।”

আঞ্চলিক ক্রিকেট কাঠামো নিয়ে বুলবুল বলেন, “ঢাকায় বসে রাজশাহী বা চট্টগ্রামের দল গঠন করা ঠিক নয়। আমরা decentralized cricket চাই—তৃণমূল থেকে জাতীয় দলে ওঠার সুযোগ যেন থাকে। তবে এটি ‘ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ’ নয়, ‘ক্রিকেটের বিকেন্দ্রীকরণ’।”
তিনি জানান, আঞ্চলিক সংগঠনগুলোকে বোর্ড সরাসরি অনুদান দেবে না, বরং পারফরম্যান্স, অবকাঠামো, কোচ ও আম্পায়ারদের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে তহবিল বরাদ্দ করা হবে। এই মডেল বিসিবি তৈরি করছে।

প্রতিবন্ধকতা নিয়ে তিনি বলেন, “যদি শক্ত সিদ্ধান্ত নিতে হয়, নেব। আইসিসির প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এটি আমাদের এক নম্বর অগ্রাধিকার। শুরুতে শুধু ক্রিকেট কাঠামো নিয়ে যাব, পরে রিজিওনাল সেন্টার স্থাপন করব।”

বিসিবিতে থাকা সাবেক ক্রিকেটারদের সম্পদ হিসেবে দেখতে চান বুলবুল। তিনি বলেন, “নান্নু ভাই, আকরাম ভাই, লিপু ভাই, বাশার—তারা ক্রিকেটের ভেতরের মানুষ। তাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে হবে। যদিও একজন ভালো খেলোয়াড় মানেই ভালো প্রশাসক বা কোচ হন না, সেটার ব্যবস্থাও করব।”

এছাড়া মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহর ভবিষ্যৎ নিয়েও পরিকল্পনার কথা জানান বুলবুল। তার ভাষায়, “ওরা আন্তর্জাতিক কোচ হতে চায়। বিসিবির অধীনে ট্রেনিং ও এডুকেশন প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমরা এটা বাস্তবায়ন করব।”

বর্তমান বোর্ডের মেয়াদ শেষ হবে অক্টোবরে। নির্বাচন প্রসঙ্গে বুলবুল বলেন, “এখনও দায়িত্ব নেওয়ার ৪৮ ঘণ্টা হয়নি। নির্বাচনের ব্যাপারে আলোচনা হয়নি, আগে কিছু সময় দেখে বুঝে বলতে হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts