কানাডা জাতীয় দলের হয়ে খেলা সামিত সোম এখন বাংলাদেশের হয়ে খেলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সেই আগ্রহকে বাস্তবে রূপ দিতে প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। প্রায় তিন সপ্তাহ আগে শুরু হওয়া এই প্রক্রিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ পার হয়েছে আজ সকালে—বাফুফে পেয়েছে কানাডা ফুটবল ফেডারেশনের অনাপত্তিপত্র (NOC)।
বাফুফের সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম জানালেন, “আজ সকালে আমরা কানাডা ফুটবল ফেডারেশনের চিঠি হাতে পেয়েছি। সেখানে সামিতের দুই ম্যাচে অংশগ্রহণের বিস্তারিত তথ্য রয়েছে—কত মিনিট খেলেছেন, কার বিপক্ষে খেলেছেন, সবই আছে। আগামীকাল সামিতের পাসপোর্টের জন্য আবেদন করব। পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার পর ফিফার কাছে আবেদন জমা দেওয়া হবে। আমরা চাই ১০ জুন ঢাকায় সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচে সামিতকে খেলাতে।”
বিধি অনুযায়ী, অন্য দেশের হয়ে খেললেও পরবর্তীতে ভিন্ন দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে চাইলে জটিল কিছু আনুষ্ঠানিকতা পূরণ করতে হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে পাসপোর্ট এবং পূর্ববর্তী দেশের অনাপত্তিপত্র। ইংল্যান্ডে জন্ম নেওয়া ও খেলা হামজা চৌধুরীর ক্ষেত্রেও একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছিল বাফুফে।
তবে সামিতের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হলো—পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার আগেই জন্ম নিবন্ধনের কাগজপত্র দিয়ে কানাডা ফুটবল ফেডারেশনের কাছে অনাপত্তিপত্র চেয়েছে বাফুফে। এ বিষয়ে ফাহাদ করিম বলেন, “সাধারণত পাসপোর্ট হওয়ার পরই NOC চাওয়া হয়। কিন্তু সামিত যেহেতু স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে তিনি আর কানাডার হয়ে খেলবেন না, তাই আমরা দেরি করিনি। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট দিয়ে দ্রুত আবেদন করেছি। কানাডা ফেডারেশনের সুনির্দিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত উত্তর পাওয়ার চেষ্টা করেছি, এবং আজই সেটা পেয়েছি।”
কানাডায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাই কমিশন ইতোমধ্যে সামিতের পাসপোর্ট প্রস্তুত করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। বাফুফে আশাবাদী, আসন্ন সপ্তাহেই পাসপোর্ট হাতে পাবে এবং এরপর ফিফার প্লেয়ার স্ট্যাটাস কমিটির কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন জমা দেবে। প্রয়োজনীয় সব নথি—পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন ও কানাডার অনাপত্তিপত্র—দাখিল করা হবে।
ফিফার অনুমোদন পাওয়া গেলে সামিত সোম বাংলাদেশের হয়ে খেলার পূর্ণাঙ্গ অনুমতি পাবেন। সামনে রয়েছে বড় চ্যালেঞ্জ—১০ জুন ঢাকায় সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচ। এই ম্যাচে খেলোয়াড় নিবন্ধনের শেষ সময় ৩ জুন। বাফুফে আশা করছে, ২ জুনের মধ্যেই ফিফা থেকে ইতিবাচক উত্তর পেলে সামিতকে সেই ম্যাচের দলে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হবে।
তবে আগের অভিজ্ঞতা বলছে, হামজা চৌধুরীর ক্ষেত্রে ফিফা তিন মাসের বেশি সময় নিয়েছিল সিদ্ধান্ত দিতে। সামিতের বিষয়ে ফিফা কত দ্রুত সাড়া দেয়, সেটিই এখন দেখার বিষয়।