বাংলাদেশ ক্রিকেটের হেড কোচ হিসেবে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের অধ্যায় শেষ হয়েছে বেশ কিছুদিন আগে। তবে ২০২৩ সালের বিশ্বকাপে নাসুম আহমেদকে চড় মারার ঘটনাই যে তার বিদায়ের মূল কারণ হতে পারে, তা নতুন করে আলোচনায় এসেছে। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ নিজেই বিদায়ের দিনে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন সেই বিতর্কিত ঘটনার কথা। আর এবার সেই ঘটনা ঘিরেই মুখ খুলেছেন হাথুরুসিংহে ও তার দুই সহকারী—নিক পোথাস ও রঙ্গনা হেরাথ।
অস্ট্রেলিয়ার প্রভাবশালী ক্রীড়ামাধ্যম ‘কোড স্পোর্টস’-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হাথুরুসিংহে প্রথমবারের মতো সরাসরি নাসুম-ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন। একই মাধ্যমে কথা বলেছেন তার দুই সহকারী কোচও।
ঘটনা অস্বীকার করেছেন হেরাথ ও পোথাস
সাবেক স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথ বলেছেন, “আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, তেমন কিছু ঘটেনি। বিশ্বকাপের সময় চারপাশে অনেক ক্যামেরা ছিল। কেউ চাইলে বলতেই পারে কিছু ঘটেছে, কিন্তু সেটার প্রমাণ থাকতে হবে। আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম এবং দেখেছি, চড় মারা ও পিঠে ধাক্কা দেওয়ার মধ্যে বিশাল পার্থক্য রয়েছে।”
ব্যাটিং কোচ নিক পোথাসও দাঁড়িয়েছেন হাথুরুর পক্ষে। তিনি বলেন, “আমি হাথুরুসিংহেকে অনেক ভালোভাবে চিনি। তিনি অভিজ্ঞ, পেশাদার একজন কোচ। যদি তিনি এমন কিছু করে থাকতেন, তাহলে এত দিন এই পর্যায়ে কোচ হিসেবে টিকে থাকতে পারতেন না। যারা এমন অভিযোগ তুলেছেন, তাদের কিছু না কিছু ক্ষোভ ছিল বলেই আমার মনে হয়।”
তিনি আরও যোগ করেন, “অভিযোগকারী হয়তো বুঝতেই পারেনি এই ঘটনা কতটা ছড়িয়ে যাবে। এর ফলে হাথুরুর জীবন অনেক কঠিন হয়ে গেছে।”
হাথুরুসিংহের অভিযোগ বিসিবির বিরুদ্ধে
চন্ডিকা হাথুরুসিংহে নিজেও জানিয়েছেন, তিনি কোনো খেলোয়াড়ের সঙ্গে ঝগড়া করেননি বা আবেগে ফেটে পড়েননি। তার ভাষ্য, “হতাশা থেকে হয়তো একবার ডাস্টবিন ছুড়ে মেরেছি, যেটা কোচদের ক্ষেত্রেই সাধারণ ঘটনা। তবে যে অভিযোগ আমার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে, সেটা একেবারেই আলাদা এবং খুবই মারাত্মক।”
তিনি বিসিবির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, “ক্রিকেট আমার জীবন। অথচ আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই আমার ক্যারিয়ার শেষ করে দেওয়া হয়েছে। এটা আমার ওপর বিশাল চাপ তৈরি করেছে।”
এই ঘটনার নতুন করে প্রকাশ্যে আসায় বাংলাদেশের ক্রিকেট অঙ্গনে আবারও বিতর্কের ঝড় উঠেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, সত্যিই কি ঘটনাটি ঘটেছিল? নাকি কোনো অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব বা রাজনৈতিক প্রভাব এতে বড় ভূমিকা রেখেছে? এ প্রশ্নের উত্তর হয়তো ভবিষ্যতেই স্পষ্ট হবে। তবে আপাতত, হাথুরুসিংহের অধ্যায় শেষ হলেও তার প্রভাব থেকে যাচ্ছে টাইগার ক্রিকেটে।