টেস্ট ক্রিকেট—বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এই ফরম্যাটটা যেন এক দীর্ঘ আক্ষেপের নাম। ২০০০ সালে অনেকটা তাড়াহুড়ো করেই ভারত ও পাকিস্তানের সমর্থনে টেস্ট মর্যাদা পায় বাংলাদেশ। তবে দুই যুগ পেরিয়ে গেলেও এই সংস্করণে উল্লেখযোগ্য কোনো সাফল্যের মুখ দেখতে পারেনি টাইগাররা।

এখনও পর্যন্ত টেস্ট খেলুড়ে সব দেশের মাটিতে জয়ের স্বাদ পায়নি বাংলাদেশ। তাই রেকর্ডবুকও হয়ে উঠেনি খুব একটা সমৃদ্ধ। চলমান সিলেট টেস্টেও সেই পুরনো দুর্বলতারই পুনরাবৃত্তি দেখা গেল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও দেখা গেল চিরচেনা ব্যাটিং বিপর্যয়।

তবে সেই বিপর্যয়ের মাঝে একরাশ আলোর নাম জাকের আলী অনিক। টেলএন্ডারদের সঙ্গে জুটি গড়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টায় এবারও সফল তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে তার ৫৭ রানের লড়াকু ইনিংস নতুন ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটে।

জাকের আলী হয়ে গেছেন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ক্রিকেটার, যিনি টেস্ট অভিষেকের পর টানা চার ম্যাচে অন্তত একটি করে ৫০ পেরোনো ইনিংস খেলেছেন। এমন কীর্তি আগে দেশের হয়ে গড়তে পারেননি কেউই।

এবার লক্ষ্য বিশ্বরেকর্ড! লঙ্কান অলরাউন্ডার কামিন্দু মেন্ডিসের টানা ৮ টেস্টে ৫০ পেরোনো ইনিংসের রেকর্ড ছুঁতে হলে আরও চারটি টেস্টে ফিফটি করতে হবে জাকেরকে। গত বছরই এই বিশ্বরেকর্ড গড়েছিলেন কামিন্দু।

জাকেরের ধারাবাহিকতা শুরু হয় গত বছরের অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচ দিয়ে, যেখানে মিরপুর টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ৫৮ রান। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথম টেস্টে করেন ৫৩, দ্বিতীয় টেস্টে ৯১। আর সর্বশেষ সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তার ইনিংস ৫৭ রানের।

তবে ব্যতিক্রমী এই ব্যক্তিগত অর্জনের দিনটা বাংলাদেশের দলের জন্য ছিল হতাশার। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৫৫ রানে অলআউট হওয়ায় জিম্বাবুয়ের সামনে লক্ষ্য মাত্র ১৭৪ রান। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তারা বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে চলেছে।

টেস্টে দলীয় ব্যর্থতার মধ্যেও জাকের আলী অনিক যেন হয়ে উঠেছেন টাইগারদের লড়াইয়ের প্রতীক। তার ব্যাটে ভবিষ্যতের টেস্ট বাংলাদেশ দেখছে এক নতুন আশার আলো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts