অস্ট্রেলিয়ার তারকা অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। ৩৬ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার সোমবার ‘দ্য ফাইনাল ওয়ার্ড পডকাস্ট’-এ দেওয়া এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দেন।
ম্যাক্সওয়েল জানান, ২০২২ সালে তার পা ভেঙে যাওয়ার পর ওয়ানডে ফরম্যাটটি তার শরীরের ওপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি করছে। সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অংশগ্রহণের পর শরীরে ব্যথা অনুভব করেন বলেও জানান তিনি।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমার শরীরের প্রতিক্রিয়াগুলো দেখে মনে হচ্ছিল, আমি যেন দলের জন্য একটি বোঝা হয়ে যাচ্ছি। এরপর আমি নির্বাচক প্রধান জর্জ বেইলির সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করি এবং তাকে জানাই, ২০২৭ বিশ্বকাপ আমার পরিকল্পনায় নেই। এখনই সময় আমার জায়গায় নতুন কাউকে তৈরি করার। আমি কখনোই নিজের জায়গা ধরে রাখার জন্য খেলিনি।”
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘ ফরম্যাটের এই খেলা এখন তার পক্ষে আগের মতো আর সহজ নয়। আগের শারীরিক সক্ষমতাও ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
২০১২ সালে ওয়ানডেতে অভিষেকের পর থেকে ম্যাক্সওয়েল অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১৪৯টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেছেন। এই ফরম্যাটে তিনি দুইবার বিশ্বকাপ জয় করেছেন, করেছেন চারটি সেঞ্চুরি ও একটি ডাবল সেঞ্চুরি—যা এসেছে ২০২৩ বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২০১ রানের ঐতিহাসিক ইনিংসে। পাশাপাশি বল হাতে শিকার করেছেন ৭৭টি উইকেট।
তবে ওয়ানডে থেকে বিদায় নিলেও টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলা চালিয়ে যাবেন ম্যাক্সওয়েল। সামনে রয়েছে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, যেটি অনুষ্ঠিত হবে ভারত ও শ্রীলঙ্কায়।
তার আগে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন স্টিভেন স্মিথ। এবার সেই পথেই হাঁটলেন ম্যাক্সওয়েল। যদিও তিনি এখনো টেস্ট ক্রিকেট থেকে আনুষ্ঠানিক অবসর নেননি, তবে ২০১৭ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে শেষবার মাঠে নামার পর লাল বলের ক্রিকেটে তার প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা অনেকটাই ক্ষীণ।
ম্যাক্সওয়েলের বিদায়ের দিনে তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী টড গ্রিনবার্গ। তিনি বলেন, “গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ব্যাটিং ছিল বিস্ফোরক ও চিত্তাকর্ষক। তিনি শুধু ম্যাচ জেতাননি, বিশ্বজুড়ে তরুণদের অনুপ্রাণিত করেছেন। ২০২৩ বিশ্বকাপে তার অসাধারণ ইনিংসটি ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছে।”
প্রধান নির্বাচক জর্জ বেইলি বলেন, “ম্যাক্সওয়েল ছিলেন ওয়ানডে ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ডায়নামিক খেলোয়াড়। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং—সব জায়গাতেই তিনি অনন্য। দুটি বিশ্বকাপ জয়ে তার অবদান অমূল্য। এখনো টি-টোয়েন্টিতে আমাদের দলের জন্য বড় সম্পদ তিনি।”