প্রথমবারের মতো এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। আগামী বছর ১ থেকে ২১ মার্চ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়ার তিনটি শহর—সিডনি, পার্থ ও গোল্ডকোস্টে অনুষ্ঠিত হবে এই মহাদেশীয় টুর্নামেন্ট, যেখানে অংশ নেবে এশিয়ার সেরা ১২টি দল।

এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশন (এএফসি) টুর্নামেন্টের ড্র আয়োজন করবে ২৯ জুলাই, অস্ট্রেলিয়ার সিডনি হারবারে। এরই মধ্যে ড্রয়ের জন্য অংশগ্রহণকারী দলগুলোর পট তালিকা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। ফিফা নারী ফুটবল দলের সর্বশেষ (১২ জুন) র‌্যাংকিংয়ের ভিত্তিতে দলগুলো চারটি পটে ভাগ করা হয়েছে, প্রতি পটে তিনটি করে দল।

কোন পটে কারা?
পট ১: স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া (র‌্যাংকিং ১৫), জাপান (৭), উত্তর কোরিয়া (৯)
অস্ট্রেলিয়া স্বাগতিক হওয়ায় সরাসরি ‘এ’ গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে থাকবে। অন্য দুই দল জাপান ও উত্তর কোরিয়া ‘বি’ বা ‘সি’ গ্রুপের শীর্ষ দল হবে।

পট ২: চীন (১৭), দক্ষিণ কোরিয়া (২১), ভিয়েতনাম (৩৭)
গত আসরে শীর্ষ তিনে থাকা চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া সরাসরি মূল পর্বে খেলছে। তবে র‌্যাংকিংয়ে পিছিয়ে থাকায় চীন এবার দ্বিতীয় পটে।

পট ৩: ফিলিপাইন (৪১), চাইনিজ তাইপে (৪২), উজবেকিস্তান (৫১)

পট ৪: বাংলাদেশ (১২৮), ভারত (৭০), ইরান (৬৮)
এই পটের দলগুলো বাছাই পর্ব পেরিয়ে এসেছে। র‌্যাংকিংয়ে সবচেয়ে পিছিয়ে থাকায় বাংলাদেশ রয়েছে পট ৪-এ।

একই পটের দুই দল এক গ্রুপে পড়বে না, অর্থাৎ বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে বা ইরানের সঙ্গে একই গ্রুপে পড়বে না।

গ্রুপিং ও কোয়ার্টার ফাইনালে যাওয়ার পথ
প্রতিটি গ্রুপে থাকবে চারটি করে দল—প্রতি পট থেকে একটি করে। তিনটি গ্রুপের সেরা দুই দল ছাড়াও, তৃতীয় স্থান পাওয়া দলের মধ্যে সেরা দুই দল কোয়ার্টার ফাইনালে উঠবে।

বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হবে পট ৩ থেকে আসা দলের বিপক্ষে। ফিলিপাইন, চাইনিজ তাইপে ও উজবেকিস্তানের যেকোনো একটির মুখোমুখি হবে তারা। এই তিন দলের র‌্যাংকিং ৪১ থেকে ৫১-এর মধ্যে, যেখানে বাংলাদেশ সম্প্রতি ৫৫ নম্বরে থাকা মিয়ানমারকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছে। ফলে এখানেই বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালের স্বপ্ন দেখতে পারে।

সম্ভাবনার হিসাব
পট ১-এর শক্তিধর অস্ট্রেলিয়া, জাপান বা উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে পয়েন্ট পাওয়া বাংলাদেশের জন্য হবে কঠিন কাজ। তবে বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্টে (এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬) অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে লড়াই করার অভিজ্ঞতা রয়েছে বাংলাদেশের নারী দলের।

পট ২ থেকে যদি বাংলাদেশের গ্রুপে ভিয়েতনাম (র‌্যাংকিং ৩৭) পড়ে, তাহলে ভাগ্য কিছুটা সুপ্রসন্ন হতে পারে। কারণ এই পটের অন্য দুই দল—চীন (১৭) ও দক্ষিণ কোরিয়া (২১)—অনেক বেশি শক্তিশালী।

বিশ্বকাপ ও অলিম্পিকের সম্ভাবনা
এই টুর্নামেন্টের পারফরম্যান্সের ওপর নির্ভর করে ভবিষ্যতের বিশ্বকাপ ও অলিম্পিকে খেলার সুযোগ পাবে দলগুলো। তাই কোয়ার্টার ফাইনালে উঠতে পারলে বাংলাদেশের নারীদের সামনে খুলে যাবে নতুন দিগন্ত।

শেষ কথা:
ড্রয়ের ফলাফল বাংলাদেশের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক গ্রুপিং হলে ইতিহাস গড়ার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে টাইগ্রেসদের সামনে। এখন শুধু অপেক্ষা ২৯ জুলাইয়ের—যেদিন নির্ধারণ হবে কার সঙ্গে কাদের লড়াই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Related Posts